খেলায় হাঁটুতে ইনজুরি লক্ষণসমূহ (পর্ব – ১)

ডিপিআরসিতে আসার রোগীর মতামত জানুন: “কোনদিন ভাবতে পারি নি আবার মাঠে খেলতে পারবো; আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি”

খেলায় হাঁটুতে ইনজুরি লক্ষণসমূহ

যে কেউ কোন না কোন সময় খেলতে গিয়ে হাঁটু ইনজুরিতে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক খেলোয়াড় স্পোর্টস ইনজুরিতে ভোগান্তির পর খেলায় পুরো দমে ফিরে আসতে পারে। অনেকে খেলায় ফিরলেও পূর্বের খেলা প্রদর্শন করতে পারেন না। আবার অনেক খেলোয়াড়কে যথোপযুক্ত চিকিৎসা এবং পরিমিত পরিচর্যার অভাবে খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসমাপ্তি টানতে হয়। শরীরের বড় ও ওজন বহনকারী জোড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম বিধায় হাঁটু স্পোর্টস ইনজুরিতে আক্রান্ত হয় বেশি। হাঁটুতে চারটি প্রধান লিগামেন্ট ও দুটি মেনিসকাস (তরুণাস্থি) থাকে। এগুলো এক হাড়কে অন্য হাড়ের সঙ্গে যুক্ত করে, জোড়ায় শক্তি প্রদান করে, হাড়ের নড়াচড়ায় অংশগ্রহণ করে, শরীরের ওজন সমভাবে উরুর হাড় থেকে পায়ের হাড়ে সরবরাহ করে এবং জোড়ার স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

স্পোর্টস ইনজুরির কারণ

ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাস্কেটবল, ভলিবল, হ্যান্ডবল, কাবাডি ও হা-ডু-ডু খেলোয়াড়দের হাঁটুতে স্পোর্টস ইনজুরি হয়। এধরনের অধিকাংশ স্পোর্টস ইনজুরি মচকানো (টুইস্টিং) প্রকৃতির। এক খেলোয়াড়ের সঙ্গে অন্য খেলোয়াড়ের সংঘর্ষের ফলে হাঁটুতে স্পোর্টস ইনজুরি হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংঘর্ষ ছাড়াই (নন-কন্ট্রাক্ট) বিভিন্ন পরিস্থিতে হাঁটু ও পায়ের বিভিন্ন অবস্থানের জন্য লেগের হাড়ের (টিবিয়া) বাইর বা ভেতর ঘূর্ণন হয় অথবা সামনে বা পেছনে সরে যায়। এধরনের আঘাতে হাঁটুর লিগামেন্ট ও মেনিসকাস ইনজুরি হয়ে থাকে। ফুটবল, ক্রিকেট ও হকি খেলোয়াড়দের মাঝে এনটেরিওর ক্রুসিয়েট ও মিডিয়াল কোল্যাটারাল লিগামেন্ট ইনজুরি বেশি হয়। ৭০ শতাংশ ব্যক্তির এনটেরিওর ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট ইনজুরির সঙ্গে মেনিসকাস ইনজুরি থাকে। এছাড়াও জোড়া স্থানচ্যুতি এবং হাড় (টিবিয়াল স্পাইন) ফ্র্যাকচার হতে পারে।

খেলায় হাঁটু ইনজুরির লক্ষণসমূহ

  1. আক্রান্ত ব্যক্তি আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ‘পপ’ বা ‘ক্র্যাক’ শব্দ শুনতে বা বুঝতে পারবে।
  2. প্রথমে তীব্র ব্যথা পরে আস্তে আস্তে ব্যথা কমে আসে। এ ব্যথা হাঁটুর বাইরের পাশে এবং পেছনে অনুভূত হবে। হাঁটু ভাঁজ বা সোজা করতে গেলে ব্যথা বেড়ে যায়।
  3. আঘাতের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে হাঁটু ফুলে যায়। প্রথম না ফুললে বারো থেকে চব্বিশ ঘণ্টা পরও হাঁটু ফুলতে পারে।
  4. পড়ে গেলে, দাঁড়াতে বা হাঁটতে চেষ্টা করলে মনে হবে হাঁটু ছুটে যাচ্ছে বা বেঁকে যাচ্ছে।
  5. ফুলা ও ব্যথার জন্য হাঁটু নড়াচড়া এবং সোজা করা যায় না।
  6. অনেক সময় হাঁটু আটকে যায়, বেশিক্ষণ বসলে রোগী হাঁটু নড়াচড়া করিয়ে সোজা করে।
  7. উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটা যায় না, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে এবং বসলে উঠতে কষ্ট হয়।
  8. হাঁটু অস্থিতিশীল বা ছুটে বা ঘুরে যাচ্ছে, এ রকম মনে হবে।
  9. দীর্ঘদিন যাবত লিগামেন্ট ইনজুরি থাকলে হাঁটুর পেশী শুকিয়ে যায় এবং হাঁটুতে শক্তি কমে যায়।
  10. সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে মাঝে মাঝে হাঁটু ফুলে, হাড় ও তরুণাস্থি ক্ষয় হয় এবং অল্প বয়সে অস্টিওআর্থ্রাইটিস হয়।

আরো পড়ুন: খেলায় হাঁটু ইনজুরি: লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের কার্যকরী পদ্ধতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12/1 Ring Road, Shyamoli, Dhaka

09666 77 44 11

dprchospital@dprcbd.com