অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস: একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা
অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস এমন একটি রোগ যা হাড়ের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে রক্ত সরবরাহ বন্ধের ফলে হয়।
রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে হাড়ের টিস্যু মারা যায় এবং হাড় ভেঙে যায়। যখন কোনো জয়েন্ট, যেমন হিপ জয়েন্টের
কাছাকাছি হয়, তখন জয়েন্টের পৃষ্ঠটি ভেঙে যেতে পারে। এ অবস্থা যে কোনো হাড়ে হতে পারে, তবে সাধারণত এটি
লম্বা হাড়ের শেষ মাথায় ঘটে। এটি একটি হাড়, একই সময়ে অনেক হাড় অথবা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হাড়কে ক্ষয়গ্রস্ত
করতে পারে।
কোথায় কোথায় নেক্রোসিস হতে পারে
- গোড়ালি
- চোয়ালে
- হাঁটুতে
- হাতের হিউমেরাস ও কাঁধের জয়েন্টে
- পায়ের ফিমার ও হিপ জয়েন্টে
অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের কারণ
- কোনো কারণে জয়েন্টে আঘাত পেলে
- জয়েন্ট ভেঙে গেলে
- কোনো কারণে রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে
- দীর্ঘদিন ধরে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ সেবন করলে
- দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপান করলে
- ডায়াবেটিস বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হলে
- রক্তের রোগ (যেমন: সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, লিউকেমিয়া)
- র্যাডিয়েশনের বা কেমোথেরাপির কারণে
- এইচআইভি/এইডস রোগের জন্য
- অটো ইমিউন রোগের জন্য
- হাইপার লিপিডেমিয়া বা হাইপার কোয়াগুলেবেল অবস্থায় থাকলে
- প্যানক্রিয়াটাইটিস, গাউচার রোগ, সিস্টেমেটিক লুপাস ইরাইথিম্যাটাস
- কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে
- জয়েন্ট ডিসলোকেশন
রোগের লক্ষণ
- হাঁটাচলা করার সময় ব্যথা লাগা
- পায়ে টান লাগা
- সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় ব্যথা অনুভব করা
- দাঁড়ানোর সময় ব্যথা অনুভব করা
- হাঁটু ভেঙে বসতে না পারা
- আক্রান্ত অঙ্গ ছোট হয়ে যাওয়া
- কুঁচকিতে, ঊরুতে, নিতম্বে ব্যথা হওয়া
- বিশ্রাম নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভব হওয়া
- ক্রস পায়ে বসতে না পারা
রোগ নির্ণয়
- এক্স-রে
- এমআরআই
- সিটি স্ক্যান
- হাড়ের স্ক্যান
- বায়োপসি
- হাড়ের কার্যকারিতা পরীক্ষা
চিকিৎসা
নন-সার্জিক্যাল চিকিৎসা
- আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা বা গরম সেঁক
- কিছু নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ওষুধ
- ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
- পুনর্বাসন এবং বিশ্রাম
সার্জিক্যাল চিকিৎসা
- কোর ডিকম্প্রেশন (Core Decompression)
- হাড় গ্র্যাফটিং (Bone Grafting)
- অস্টিওটমি (Osteotomy)
- সম্পূর্ণ হিপ জয়েন্ট প্রতিস্থাপন (Total Hip Joint Replacement)
জটিলতা
চিকিৎসা করা না হলে এই রোগ ধীরে ধীরে খারাপ রূপ ধারণ করে। অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের ফলে
হাড়ের মসৃণ আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়, ফলে আর্থ্রাইটিস হতে পারে। ব্যথা বা অন্য কোনো লক্ষণ প্রকাশ
পেলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।