ভিডিও শিরোনাম: অষ্টিওআর্থ্রাইটিস ও অষ্টিওপোরোসিস কেন হয় ও চিকিৎসা জানুন? Osteoarthritis || Osteoporosis Treatment
অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়রোগ
অস্টিওপোরসেস বা হাড়ের ক্ষয়রোগ হচ্ছে এমন একটি রোগ, যার ফলে হাড়ের ঘনত্ব নির্দিষ্ট মাত্রায় কমে যাওয়ায় হাড় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এতে হাড়ের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়, হাড়ের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট হয়ে ক্রমেই হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। ফলে হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।
কারণ :
- হাড়ের গঠন ও ক্ষয়ের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়া।
- মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব।
- থাইরয়েড এবং প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিজনিত সমস্যা।
- অপর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণ।
- জেনেটিক বা বংশানুক্রমিক রোগ যেমন হাড়ের ক্যান্সার।
উপসর্গ ও লক্ষণ :
- অস্টিওপোরোসিসে হাড় নীরবে ক্ষয় হতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে হাড় ভাঙার মাধ্যমে এর উপস্থিতি টের পাওয়া যায়।
- হাড় ও পেশিতে ব্যথা।
- ঘাড় ও পিঠে ব্যথা।
- সহজেই মেরুদণ্ড, কোমর বা কব্জির হাড় ভেঙে যাওয়া।
- কুঁজো হয়ে যাওয়া।
ঝুঁকি যাদের বেশি :
- মেনোপজ বা ঋতু বন্ধ-পরবর্তী নারী।
- অপর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ গ্রহণ।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন।
- নিয়মিত শরীর চর্চা না করা।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত।
- এইডস, স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত রোগী।
- দীর্ঘদিন ধরে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ সেবন।
শনাক্তকরণ
সাধারণ এক্স-রের মাধ্যমে অস্টিওপোরোসিস সম্পর্কে ধারণা করা যেতে পারে। তবে সঠিকভাবে এর মাত্রা জানতে হলে বোন মিনারেল ডেনসিটি (BMD) পরীক্ষা করা দরকার। সাধারণত কোমর, মেরুদণ্ড বা কব্জির ডেক্সা স্ক্যান করে বিএমডির সঠিক মাত্রা নির্ণয় করা হয়।
BMD এর মাত্রা:
- স্বাভাবিক: T score -1 SD এর সমান বা ওপরে।
- অস্টিওপেনিয়া: T score -1 SD থেকে -2.5 SD।
- অস্টিওপোরোসিস: T score -2.5 SD বা কম।
প্রতিরোধ :
- সুষম খাদ্য গ্রহণ।
- পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ সমৃদ্ধ খাবার।
- নিয়মিত শরীর চর্চা (যেমন হাঁটা, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা)।
- ধূমপান ও মদপান বর্জন।
ক্যালসিয়াম :
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ১০০০-১২০০ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। প্রধান উৎস হলো দুধ, শাকসবজি, ছোট মাছ, ফলমূল।
ভিটামিন ‘ডি’ :
সূর্যালোক ভিটামিন ‘ডি’-এর অন্যতম উৎস। পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ, কড লিভার তেল, ডিম, দুধও ভালো উৎস।
ব্যায়াম :
নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটার মাধ্যমে হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব।
চিকিৎসা :
- ধূমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ।
- পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার এবং শরীর চর্চা।
- প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ।
- হাড় ক্ষয় প্রতিরোধে ব্যবহৃত ওষুধ যেমন বিসফসফোনেটস গ্রহণ।