যে জৈব খাদ্য উপাদান সাধারণ খাদ্যে অতি অল্প পরিমাণে থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে, তাকে ভিটামিন বলে। দেহে ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণের অভাবে বিভিন্ন রোগ বা সমস্যার প্রাদুর্ভাব হয়। যেমন ভিটামিন A’র অভাবে চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
আমরা প্রতিদিন যেসব খাবার খেয়ে থাকি তার মধ্যেই থাকে প্রাকৃতিক ভিটামিনের মজুত। ভিটামিনে কোনো রকম ক্যালরি থাকে না এবং ভিটামিন প্রতিদিনের খাবারে মজুত প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট প্রসেস করতে সাহায্য করে।
অকাল বার্ধ্যকের হাত থেকে আমাদের শরীরকে যেমন রক্ষা করে তেমনি ভিটামিন অনেক ক্ষেত্রেই ক্যান্সার এবং অক্সিডেটিভ ড্যামেজের (দূষণ এবং স্ট্রেস থেকে তৈরি হয়) সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন আমাদের শরীরের কোষ এবং টিস্যু বাড়াতে সাহায্য তো করেই, তাছাড়া বিভিন্ন অঙ্গের রক্ষণাবেক্ষণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতেও সাহায্য করে।
ভিটামিনের উপকারীতা ও খাবার সমূহঃ
ভিটামিন এ: ত্বক, চুল ও চোখের জন্য খুবই উপকারী।
যেসকল খাবারে পাবেন: দুধ, গাজর, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, আম, লালশাক, সব রকমের সবুজ শাকসবজি, কড লিভার অয়েল, যকৃত, পালংশাক, রঙিন শাকসবজি, চিজ, অ্যাপ্রিকট, ডিম, পেঁপে, মটরশুঁটি।
ভিটামিন বি: ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। হজম শক্তি বৃদ্ধি ও হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
যেসকল খাবারে পাবেন: মাছ, যেকোনো রকমের সি ফুড, মাংস, শস্যদানা, ডিম, ডেইরি প্রডাক্ট এবং সবুজ শাকসবজি।
ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের বিভিন্ন টিস্যু ভালো রাখতে সাহায্য করে। শরীরের সেরে ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।
যেসকল খাবারে পাবেন: কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, কাঁচামরিচ, ব্রকলি, ফুলকপি, কিউই ফল, গাজর, পেঁপে, আনারস, আঙুর, আম, জাম, আলু, তরমুজ, কলা, পেঁয়াজ, চেরিফল, পেয়ারা, কিশমিশ, লেটুসপাতা, বেগুন, ডুমুর।
ভিটামিন ডি: হাড় ও দাঁত মজবুত করার জন্য খুবই উপকারী। হাড় ও দাঁতের গঠনের জন্য জরুরি। এছাড়া শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।
যেসকল খাবারে পাবেন: দুধ, মাছ, ডিমের কুসুম, যকৃত, ফর্টিফায়েড সিরিয়াল।
ভিটামিন ই: শরীরের টিস্যু গঠনে সহায়তা করে এবং ফুসফুসকে রক্ষা করে । চুল ও ত্বকের জন্য উপকারী।
যেসকল খাবারে পাবেন: শস্যদানা, সবুজ শাকসবজি, ডিমের কুসুম, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, সূর্যমুখীর তেল, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, পাম অয়েল।
ভিটামিন কে: শরীরের কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে।
যেসকল খাবারে পাবেন: সবুজ শাকসবজি, ডেইরি প্রোডাক্ট, ব্রকলি, সয়াবিন তেল, পুঁইশাক, বাঁধাকপি, পার্সলে, লেটুসপাতা, সরিষা শাক।
পুষ্টিকর খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা, যোগব্যায়াম, গান শোনা থেকে পছন্দের জিনিসে নিজেকে ব্যস্ত রাখা, চাপ মুক্ত থাকতে এর থেকে ভাল কোনও উপায় নেই। ত্বক ভাল রাখতে এবং স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী উপাদান ভিটামিন ডি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এবং চাপ মুক্ত রাখতে ভিটামিনের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
আরএম/ ০২ জুন, ২০২১