অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ছিদ্র হওয়া রোগ হবে যাদের

অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ছিদ্র হওয়া রোগ হবে যাদের

অস্টিওপোরোসিস কিঃ

অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ে রোগ এমন একটি রোগ যাতে হাড়ের ঘনত্ব এবং গুণগতমান হ্রাস পায়, হাড় দূর্বল হয়ে যায়। হাড়গুলো ছিদ্র এবং ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

কখন হাড় ক্ষয় হয়:

হাড়ের ক্ষয় নিঃশব্দে, ধীরে ধীরে ঘটে এবং এক সময় হাড় দুর্বল হয়ে যায়। প্রথম ফ্র্যাকচার না হওয়া পর্যন্ত প্রায়ই কোন লক্ষণ থাকে না। এটি প্রধানত নারীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে যেসকল নারীর বয়স ৪৫ বছরের উপরে মাসিক বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা অপারেশন করে জরায়ু ফেলে দেয়া হয়েছে। তবে পুরুষেরও এ রোগ হয়ে থাকে।

এই রোগ বুঝার উপায়ঃ

  • ব্যাক পেইন, হাড় ভেঙ্গে গেলে, শীরদাড়ার হাড়ের উচ্চতা কমে গেলে।
  • শরীরের উচ্চতা আগের চেয়ে কিছুটা কমে গেলে।
  • কুজো হয়ে যাওয়া বা মেরুদণ্ড বেকে গেলে।
  • শরীরে মেঝ মেঝ, কামড়ানো জাতীয় হাড়ের ব্যথা বেদনা হলে।
  • হাড় ও জোড়া ব্যথার সাথে শব্দ হলে।
  • ব্যথার মাত্রা হালাকা থেকে মাঝারী ধরনের হয়ে থাকে। ব্যথা ক্রনিক বা দীর্ঘ মেয়াদি।

রোগ নির্ণয়ঃ

  • বিএমডি
  • এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই
  • ব্লাড টেস্ট (মিনারেল টেস্ট, ভিটামিন টেস্ট)

অস্টিওপোরোসিস এর কিছু ঝুঁকিঃ

  • অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বয়স বাড়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পায়। আপনার বয়স যদি ৬০ বছরের বেশি হয়ে থাকে, তাহলে পরবর্তী স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় আপনার হাড়ের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করুন।
  • সামান্য পড়ে যাওয়ার ফলে (দাঁড়ানোর উচ্চতা থেকে) হাড় ভেঙ্গে যাওয়া অস্টিওপোরোসিসের লক্ষণ।
  • একবার হাড় ভেঙ্গলে পরবর্তী ২ বছরের মধ্যে আবার হাড় ভাঙ্গার ঝুঁকি বেশি।
  • যাদের বডি মাস ইনডেক্স (বি.এম.আই) ১৯ কেজি/মি এর নীচে, তাদের অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেশি।
  • অস্টিওপোরোসিস এর কারণে স্পাইন ফ্র্যাকচার হতে পারে। (সকল স্পাইন ফ্র্যাকচার ব্যথাযুক্ত নয়)।
  • অস্টিওপোরোসিসে হওয়া স্পাইন ফ্র্যাকচারের কারণে একজন মানুষের উচ্চতা ১.৫ ইঞ্চির মত কমে যেতে পারে।
  • আপনার মা বাবার যদি অস্টিওপোরোসিস থাকে তাহলে আপনারও হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • কিছু রোগের কারণেও অস্টিওপোরোসিস হতে পারে।
  • অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধুমপানের কারণেও অস্টিওপোরোসিস হতে পারে।
  • কিছু স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধের কারণেও অস্টিওপোরোসিস হতে পারে।
  • মেরুদণ্ড, হীপ বোন, কবজি ফ্রাকচার কমন হয়ে থাকে।

অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায় এমন কিছু রোগঃ

  • রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস
  • অন্ত্রনালীর জটিলতা
  • মুত্রথলী অথবা স্তন ক্যান্সার
  • ডায়াবেটিস
  • দীর্ঘদিন যাবৎ কিডনি জটিলতা
  • থাইরয়েড এর সমস্যা
  • শ্বাসনালীর জটিলতা
  • হাইপোগোনাডিসম
  • পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • জরুয়ু কেটে ফেলা
  • অচলতা
  • এইডস

কি ভাবে প্রতিরোধ করবেন:

মূলত সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। দৈনিক ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম এবং কিছু খাবার যেমন সবুজ শাক-সবজি, দধি, লেবুজাতীয় ফল, মাছ, বাদামজাতীয় খাবার এবং দুধ খেলে এর ঝুঁকি কমে। অস্টিওপোরোসিস রোধে ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা উচিত।

চিকিৎসাঃ

  • বিসফসফোনেটস (এলেনহ্রনেট, রিসেনড্রনেট, আইনেড্রনেট, জলিনড্রনেট)
  • ডেনুসুমেব।
  • রিহেবিলিটেশন – ফিজিক্যালথেরাপি।
  • সাপ্লিমেন্ট, মিনারেলস, ভিটামিনস।
  • শল্যচিকিৎসা।

তাই আজই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে নিশ্চিত করুন আপনার ও আপনার পরিবারের সুস্থ্যতা।

ডা. মো: সফিউল্যাহ্ প্রধান

বাত ব্যথা প্যারালাইসিস ডিসএবিলিটি ও রিহেব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ

যোগাযোগ:- ডিপিআরসি হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাব লি:

(১২/১ রিং-রোড, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭)

শ্যামলী ক্লাব মাঠ সমবায় বাজারের উল্টো দিকে

সিরিয়ালের জন্য ফোন: 01997702002 অথবা 09666774411

আরএম/ ১১ জুন, ২০২১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12/1 Ring Road, Shyamoli, Dhaka

09666 77 44 11

dprchospital@dprcbd.com